বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বিষধর সাপ এবং এর থেকে কিভাবে সতর্ক থাকা যায় ও সাপে কামড়ালে করণীয়
বাংলাদেশে প্রায় ৮০ প্রজাতির সাপ রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ২৮ প্রজাতি বিষধর (venomous snake)। সাপ আমাদের পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাণী হলেও, সঠিক জ্ঞান না থাকায় অনেক সময় তা বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে বর্ষাকালে ও খাল-বিল ঘেরা অঞ্চলে সাপের দেখা বেশি মেলে।
✅ বাংলাদেশের প্রধান বিষধর সাপের নাম
- চন্দ্রবোড়া (Russell’s Viper): প্রচণ্ড বিষধর, কামড়ানোর পর তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না হলে মৃত্যু হতে পারে।
- কালা কেউটে (Common Krait): রাত্রিকালীন সাপ, ঘুমন্ত মানুষকে কামড়ায়। বিষটি স্নায়ুতন্ত্রে আঘাত করে।
- শঙ্খচূড় বা কিং কোবরা (King Cobra): পৃথিবীর দীর্ঘতম বিষধর সাপ। বাংলাদেশে পাহাড়ি এলাকায় দেখা যায়।
- গোখরা (Monocled Cobra): ফণা তোলা এই সাপটি কামড়ালে দ্রুত স্নায়ু বিকল করে দেয়।
⚠️ সাপ থেকে সতর্ক থাকার উপায়
- ঘর বা আশপাশ পরিষ্কার রাখুন, বিশেষ করে ময়লা বা জঙ্গল ঝোপ ঝাড় মুক্ত রাখুন।
- রাতে হাঁটার সময় টর্চ ব্যবহার করুন এবং জুতার ভেতরে হাত না দিয়ে উল্টে দিন।
- বাড়িতে ইঁদুর না থাকলে সাপও কম আসবে। তাই ইঁদুরের আবাসস্থল ধ্বংস করুন।
- খালের পাড়, বিল, বাঁশঝাড়, পরিত্যক্ত জমি—এসব স্থানে সতর্ক থাকুন।
🩺 সাপে কামড়ালে করণীয়
সাপে কামড়ালে সময় নষ্ট না করে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
- অতি দ্রুত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান।
- কামড়ানো স্থানটি নিচু রাখুন (হৃদপিণ্ডের নিচে)।
- আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিত করে শোয়ান ও চলাচল সীমিত করুন।
- কোনো রকম কেটে বিষ চুষে বের করার চেষ্টা করবেন না।
- আঙ্গুলে বা হাতে কোনো চামড়ার রশি দিয়ে শক্ত করে বাঁধবেন না।
- সাপটিকে চিনে রাখুন, ছবি তুলতে পারলে ভালো, তবে ঝুঁকি নিয়ে ধরবেন না।
🚫 কী করবেন না:
- লোকজ চিকিৎসা বা ঝাড়ফুঁকের উপর নির্ভর করবেন না।
- কাটা বা বিষ টেনে বের করার চেষ্টা করবেন না।
- তেল, হলুদ, মাটি ইত্যাদি লাগাবেন না।
📌 শেষ কথা
সাপ ভয়ংকর হলেও সঠিক সচেতনতা ও দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকলে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। প্রতিটি গ্রামে ও ইউনিয়নে যেন স্নেক অ্যান্টিভেনম সহজলভ্য হয় সে বিষয়ে সবার সচেতন হওয়া উচিত।
No comments:
Post a Comment